নিজস্ব প্রতিবেদক : বাঙালির ইতিহাসে অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক অজানা কথা রয়ে গেছে যা এখনো ইতিহাসের পাতায় উঠে আসেনি। যেমন কলকাতার বেকার হোস্টেলের জীবনযাপন, মুক্তিযুদ্ধের পরে বাকশাল গঠন, এর বাস্তব প্রয়োজন এবং এ সম্পর্কে অপপ্রচার, এই সব অজানা অধ্যায় নিয়ে আলোচনা খুব জরুরি; এমন সব অজানা বিষয় “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষ আলোচনার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরছে এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। এই ভাষণেই তিনি সমস্ত বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সশস্ত্র লড়াইয়ে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। বক্তারা বলেন, যত দিন রবে এই বাংলার মাঠ, ঘাট প্রান্তর-সেই মাটি মধ্যে-বাতাসের মধ্যে যে ঘ্রাণ লেগে থাকবে -সেখানেই থাকবে -জাতির পিতার সংগ্রাম-রক্তাক্ত চোখের জল-রাজবন্দী সেলের তীব্র আর্তনাদ-কষ্টার্জিত স্বাধীনতা! হে জাতির পিতা, হে বঙ্গের বন্ধু এ মাটি কখনোই ভুলতে দেবে না তোমায়!
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন আলোচনার শুরুতে বঙ্গবন্ধু নাম বলতেই দারুণভাবে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় পাবনা এবং ঢাকায় আটবার মুখোমুখি হবার এবং কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছিলো তার। তিনি তার বক্তব্যে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানসহ ১৫ আগস্ট যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানান জাতীয় চার নেতার প্রতি। যারা কখনোই বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। যাদের কারাগারের ভেতরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিলো।
আব্দুর রহিম পাকন আরো বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো জেলখানায় যে রুমটিতে জাতীয় নেতা কামরুজ্জামান ভাই থাকতেন সেই রুমে থাকার। তিনি আবেগ ভরা কন্ঠে বলেন,হে মুজিব তোমার জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না আর তোমার কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম না হলে আমরা সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ল দেখতে পারতাম না। আজ যে স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে।’
এম এ ফারুক প্রিন্স শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে। তিনি বলেন, শেখ সাহেবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তাঁর জন্ম না হলে মানচিত্র পেতাম না, আজকে বাংলাভাষায় কথা বলতে পারতাম না। তিনি আরো বলেন, বিদেশে বসে একটি দুষ্ট চক্র হাজার হাজার অনলাইনে ফেসবুক, ইউটিউব এর মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতাকে বিকৃত করার চেস্টা করছে। তারা মূলত সেই স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান, স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্র যারা বিদেশে বসে হাজার হাজার ফেক আইডি করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার যে সফলতা তাকে বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তারা ইতিহাসকে বিতর্কিত করছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক সফলতাকে বিতর্কিত করছে, আমরা যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, স্বাধীন বাংলার নাগরিক আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিহত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা, এটি একটি বিশাল আলোচনা, গতমাসে আমি যখন জার্মান প্রেসিডেন্টকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটা দিলাম, তখন উনি একটা কথা বলেছে যে, বঙ্গবন্ধু এমন একজন ব্যাক্তি ছিলেন, যিনি যখন ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে গেছেন, যখন পৃথিবীর মানুষ এটি চিন্তাই করে নাই। আমরা ইউরোপ কিংবা অন্যান্য উন্নত দেশ থেকে অনেক এগিয়ে আছি। বঙ্গবন্ধু কিন্তু দেখিয়ে দিয়ে গেছেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ কিভাবে একসাথে বসবাস করতে পারেন। উনি সমাজতন্ত্রের কথা বলে গেছেন, উনি গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথাগুলো বলা জরুরি। নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শকে পৌঁছে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানটি গবেষণা, পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা করছেন জাহিদুজ্জামান সাঈদ, প্রধান সম্পাদক, এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশ। “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” উদ্বোধন করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামাল দেওয়ান কেডি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্ট (BLF) অপারেশন ‘হিট অ্যান্ড রান। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন, উপদেষ্টা সদস্য পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, জার্মানিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘নর্থ রাইন ভেস্ট ফালেন’ NRW প্রভিন্স এর কনসাল, জার্মানিতে ফর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। বিশেষ অতিথি এম এ ফারুক প্রিন্স, সদস্য, কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি ইউথ অ্যান্ড স্পোর্টস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ভোট অফ থ্যাংকস এর মাধ্যমে দর্শক - শ্রোতা ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সম্মানীত করেন বাবুল ইসলাম, চেয়ারম্যান, এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশ।