বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের তালিকা করার পর এখন বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ সব প্রস্তুতি রাখার পরও চীন সরকারের দেয়া ১৪ দিনের সময়সীমার কারণে বাংলাদেশ এখনও অপেক্ষা করছে।
এদিকে, চীন থেকে কয়েকজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বলেছেন, তাদের বেশিরভাগই দেশে ফেরত আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেইজিংয়ে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে চীন সরকারের পক্ষ থেকে ১৪ দিনের আগে কাউকে তাদের দেশের বাইরে যেতে না দেয়ার কথা জানানো হয়েছে।
তিনি বলেছেন, জাপান শুধু তাদের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ফেরত নেয়ার জন্য একটি বিমান বেইজিংয়ে পাঠিয়েছে, এমন একটা খবর তারা শুনেছেন। এনিয়ে আর কিছু তারা জানতে পারেননি।
তিনি বলছেন, চীন সরকার সম্মতি দেয়ার সাথে সাথেই আগ্রহী বাংলাদেশিদের ফেরত আনা শুরু হবে।
“যারা আসতে চায়, তাদের স্বদেশের আনার জন্য আমরা রাজি। সেজন্য আমরা বিমান প্রস্তুত করে রেখেছি, যাতে যেকোনো মুহূর্তে আমরা আমাদের বিমান পাঠাতে পারি।”
চীনের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই শহরেই তিনশোর বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকে পড়েছেন।
উহান শহরের একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাহকিম আনজুম মৃদুলা বলছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে তাদের নিবন্ধন করা হলেও তারা কবে ফিরতে পারবেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানতে পারছেন না।
“আমাদের আশ্বাস দেয়া হয়েছে, আমাদের নাম, পাসপোর্ট নাম্বার এবং টেলিফোন নাম্বারসহ যাবতীয় তথ্য নেয়া হয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে যে, দেশে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে ৬ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।”
“এর মধ্যে এখানে আমাদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বাহির থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা করছে। আর আমরা এখনও অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি।”
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবিল হাফিজ বলেছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা জানানো হচ্ছে যা আতংকের পরিবেশের মধ্যেও কিছুটা আশা জাগাচ্ছে।
“বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ইমেইল করে ফরম পাঠিয়ে আমাদের সব তথ্য নিয়ে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তবে ছাত্রাবাসে রুমের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকাটা কষ্টকর।”
আরেকজন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ওয়ালিদ হোসেন বলেছেন, উহানে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই ১২৭জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সবাই দেশে ফিরতে চান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের ধারণা উহানসহ চীনের বিভিন্ন নগরীতে পাঁচশোর মতো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের কেউ কেউ এই মুহূর্তে দেশে ফিরতে চান না। কারণ তারা চীন সরকারের খরচে সেখানে উন্নত চিকিৎসা পেতে পারেন।